ডিজিটাল মার্কেটিং এর এই মডার্ন যুগে এসে ফেসবুক বিজ্ঞাপন ব্যবহার করছেন না এমন ব্যবসায়ি আসলে তেমন একটা পাওয়া দুষ্কর হবে। বিশেষ করে যেখানে বর্তমানে তরুণ উদ্যোক্তারা নিজেদের একটি ফ্যান পেজ তৈরি করার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালিত করছেন এবং উদ্যোক্তার সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলেছে।
যেহেতু এই উদ্যোক্তাদের মধ্যে বেশীরভাগই তরুণ, আর তাই প্রযুক্তির সাথে এইসব উদ্যোক্তার বেশ সখ্যতাও রয়েছে।
এছাড়াও আপনি যদি একজন ডিজিটাল মার্কেটার হয়ে থাকেন, তাহলে অনলাইনে ভিডিও তৈরি, এসইও (search engine optimization), ইমেইল মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং সহ হাজারো বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্র’র মধ্য থেকে আপনাকে বেছে নিতে হবে অপেক্ষাকৃত কম খরচের একটি মাধ্যম, যেখানে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে আপনি অল্প খরচের মধ্যেই বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যেতে পারবেন।
ডিজিটাল মার্কেটিং সহজ নাকি কঠিন জেনে নিন ভিডিও থেকে
এসব ক্ষেত্রে বলা চলে ফেসবুক মার্কেটিং বা ফেসবুক বিজ্ঞাপনের তেমন কোন বিকল্প নেই।
বর্তমান ডিজিটাল মার্কেটিং যুগে সোশ্যাল মিডিয়া একটি বিশাল জায়গা দখল করে আছে। আর এই সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে ফেসবুকের জনপ্রিয়তা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। ফেসবুক পরিসংখ্যান অনুযায়ী লোকাল বিজ্ঞাপনের ৬০% বিজ্ঞাপন এখন ফেসবুকেই দেয়া হয়।
আকর্ষণীয় এই কোর্সটি করতে এখানে ক্লিক করুন
কিন্তু কেন ফেসবুক বিজ্ঞাপনের এত জনপ্রিয়তা? আর কেনই বা এই বিজ্ঞাপন ক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের মাধ্যমে অনেক বেশি সফল হওয়া যায়?
আসুন এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে চেষ্টা করি এবং জেনে নেই ফেসবুক বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করার অন্যতম কিছু কারনঃ
১। ফেসবুক বিজ্ঞাপন অনেক বেশি কার্যকর
এইতো আর এক যুগ পিছনে ফিরে তাকালেও অবাক হতে হয়। তখন কি সবাই ভাবতে পেরেছিল একটি সোশ্যাল মিডিয়া সাইট কখনো বিজ্ঞাপন জগতে অন্যতম একটি স্থান দখল করে নিবে?
প্রতিদিন প্রায় দেড় বিলিয়ন একটিভ ইউজার রয়েছে এই ফেসবুকে, এই ইউজারদেরকেই নানা রঙে ও ঢঙে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করার মাধ্যমেই ধীরে ধীরে বিজ্ঞাপন জগতের অন্যতম একটি নাম হয়ে উঠেছে ফেসবুক মার্কেটিং।
মানুষের জীবনের অন্যতম একটি অংশ হয়ে উঠেছে ফেসবুক। দৈনন্দিন জীবন যাপনের সবকিছুই এখন ফেসবুকে শেয়ার করা হয়। এমনকি বাইরে ঘুরতে গেলে অথবা কোন রেস্টুরেন্টে খেতে বসলেও ফেসবুকে শেয়ার করার জন্য ছবি তুলতে কেউ ভুলে না।
তবে ঠিক একই অভ্যাসের মাধ্যমে মানুষ নিজেদের পছন্দ অপছন্দের কথা ফেসবুকে জানিয়ে দেয়। আর ঠিক সেই তথ্য উপাত্তের উপর ভর করে ফেসবুক বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে থাকে।
আমেরিকায় বর্তমানে বিজ্ঞাপনে যত টাকা খরচ করা হয় তার ৫১ শতাংশ খরচ করা হয় কেবলমাত্র ফেসবুকেই। অর্থাৎ বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য ফেসবুককেই সবাই নির্ভরযোগ্য মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করছেন।
আদতে ফেসবুক বিজ্ঞাপন খুবি কার্যকর বিধায় বিগত এক যুগ ধরেই এই প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপনের পরিমাণও বিপুল হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
যেহেতু লাখো কোটি মানুষ ফেসবুক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন, তাই আপনি যদি উপকৃত না হন তাহলে বুঝতে হবে আপনার বিজ্ঞাপন পলিসি বা চিন্তা ভাবনায় কথাও কোন একটি ভুল হয়ে যাচ্ছে। প্রয়োজনে একজন বিজ্ঞাপন বিশেষজ্ঞের সাথে আলাপ করে নিতে পারেন।
তবে ঠিক আপনাদের কথা বিবেচনা করেই আমাদের এই ফেসবুক বিজ্ঞাপনের সিরিজটি তৈরি করা হয়েছে। পুরো সিরিজটি পড়ার মাধ্যমে আপনি ফেসবুক বিজ্ঞাপনের আদ্যোপান্ত জানতে পারবেন এবং নিজেই ফেসবুক বুস্ট বা বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন।
২। ফেসবুক ক্যাম্পেইন অনেক সহজ এবং রেজাল্ট আসে অনেক দ্রুত
ফেসবুক ক্যাম্পেইন সেট-আপ করা একদমই সহজ এবং সাবলীল আর সেক্ষেত্রে ফলাফলও আসে খুব দ্রুত। বিজ্ঞাপন জগতে এখন ROI (Return of investment) অর্থাৎ বিজ্ঞাপনে যে টাকা ইনভেস্ট করা হয় সেটা কত দ্রুত ফেরত আসছে সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আর এই ক্ষেত্রে ফেসবুক বুস্টিং এর মাধ্যমে যে খুব দ্রুত ইনভেস্টমেন্ট উঠে আসে সে কথা নতুন করে আর বলাই বাহুল্য। আর ঠিক একারণেই ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ফেসবুক মার্কেটিং এর প্রতি অনেক বেশি আসক্ত হয়ে পড়েছেন।
ফেসবুকের বিজ্ঞাপন সেট আপ করার প্রক্রিয়াটি অনেক কঠিন কিছু নয় বরং যে কেউ ফেসবুক ক্যাম্পেইন তৈরি করে পেমেন্ট মেথড সেট করে একটি সফল বিজ্ঞাপন সেট করে ফেলতে পারবে।
অনেক সময় সাপেক্ষ কিছু নয়, একদমই দুই এক মিনিটের মধ্যেই একটি ফেসবুক বিজ্ঞাপন সেট করে ফেলা যায়। এমনকি আপনি যদি একই বিজ্ঞাপন পুনরায় প্রদান করতে চান তাহলে আপনি মাত্র একটি ক্লিকের মাধ্যমেই একই বিজ্ঞাপন পুনরায় প্রদান করতে পারবেন।
এমনকি এই ক্যাম্পেইন সেট করার জন্য আপনাকে অনেক টাকা খরচ করতে হবে না। প্রতিদিন মাত্র এক ডলার পরিমাণ সর্বনিম্ন পরিমাণ খরচের মাধ্যমে আপনি বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন।
আপনি নিজের ফেসবুক পেজের যে কোন একটি পেজ বুস্ট করতে পারবেন আবার ফেসবুক বিজনেস ম্যানেজারের মাধ্যমে অনেক জটিল প্রক্রিয়ায় বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন।
জটিল প্রক্রিয়া শুনেই উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, কোন কিছুই শেখার পর আর কঠিন থাকে না। আমাদের এই ফেসবুক বিজ্ঞাপনের সিরিজটি মনোযোগের সাথে শেষ করার পর আপনি খুব সহজেই অনেক ভাবে অডিয়েন্স সিলেক্ট করে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন।
আর আপনি যদি ফেসবুক পিক্সেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে চান তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য বেশ উপকারী হয়ে উঠতে পারে।
৩। সঠিক অডিয়েন্সের কাছে বিজ্ঞাপন পৌঁছাতে পারবেন
ইতোমধ্যেই আপনারা জানেন যে প্রতিদিন ফেসবুকে একটিভ ইউজার রয়েছে প্রায় দেড় বিলিয়নের মত। সুতরাং বুঝতেই পারছেন এত ইউজারের মধ্যে আপনার সঠিক অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে পারবেন খুব সহজেই।
ফেসবুক আপনার পছন্দের অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য নানা রকম তথ্য উপাত্ত প্রদান করবে আর সেগুলোর মাধ্যমেই আপনি নির্দিষ্ট অডিয়েন্সের কাছে নিজের বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন।
আপনার অডিয়েন্সের লোকেশন, জেন্ডার, বয়স এবং ইন্টারেস্টের ভিত্তিতে আপনি এই বিজ্ঞাপনগুলো প্রদর্শন করতে পারবেন। অর্থাৎ আপনার ব্যবসা যদি ঢাকা কেন্দ্রিক হয়ে থাকে তাহলে আপনি এমন ভাবে সেট-আপ করতে পারবেন যাতে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে শুধুমাত্র ঢাকার অডিয়েন্সের কাছেই সেই বিজ্ঞাপন পৌঁছে যাবে।
আকর্ষণীয় এই কোর্সটি করতে এখানে ক্লিক করুন
ধরুন আপনি গেমিং পিসি বিক্রয় করছেন। এখন পুরো ঢাকাবাসীর কাছে নিজের বিজ্ঞাপন দিয়ে কিন্তু আপনার তেমন কোন লাভ নেই বরং আপনি যদি ইয়াং ছেলে মেয়েদের মধ্যে যাদের গেমিং এর প্রতি ইন্টারেস্ট আছে তাদের কাছে নিজের বিজ্ঞাপন পৌঁছে গেলে আপনি অনেক দ্রুত নিজের ইনভেস্টমেন্ট উঠিয়ে নিয়ে আসতে পারবেন। কেননা এদের কাছে আপনার পণ্য বিক্রয় হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে।
৪। নিজের পছন্দমত অডিয়েন্সের জন্য কাস্টমাইজড এড সেট-আপ করা যায়
এড সেট-আপ করার ক্ষেত্রে ফেসবুকের সুযোগ সুবিধা অনেক বেশি। আলাদা ক্যাটাগরিতে আপনি কাস্টমাইজড করে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন। অন্যান্য বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মের তুলনায় ফেসবুকের কাছে ইউজারদের তথ্য অনেক বেশি থাকে।
আর সেই অনুযায়ী আপনি নির্দিষ্ট অডিয়েন্সের কাছে কাস্টোমাইজ করে এড সেট করতেও পারবেন।
যেমন আপনি যদি কোন ক্যাট ফুড অথবা ডগ ফুড রিলেটেড বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে চান, তাহলে চাইলেই আপনি এমন সব মানুষদের কাছে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন যারা কি না এনিমেল লাভার অর্থাৎ কুকুর বিড়াল পুষতে অনেক বেশি পছন্দ করেন।
আর শুধুমাত্র তাদের কাছে যদি আপনার পণ্যগুলোর বিজ্ঞাপন পৌঁছে যায় তাহলে বুঝতেই পারছেন আপনার পণ্য বিক্রয় হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি হয়ে উঠে।
এছাড়াও আপনি চাইলেই আপনার উদ্দেশ্য অনুযায়ী বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন। যেমন ধরুন আপনি যদি চান যে মানুষ আপনার ফ্যান পেজে লাইক করবে অথবা আপনার পেজে পণ্য রিলেটেড মেসেজ করবে আপনি ঠিক সেই ভাবেই এই বিজ্ঞাপনগুলো সেট করতে পারবেন।
আবার আপনার যদি কোন মোবাইল এপ্স থাকে আর আপিনি চান মানুষ আপনার এপ্স ইন্সটল করুন অথবা আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর বৃদ্ধি করবেন তাহলে আপনি নিজদের উদ্দেশ্য অনুযায়ী বিজ্ঞাপন ক্যাম্পেইন সেট করে নিতে পারবেন।
আর এই ধরনের চমৎকার সব সুযোগ সুবিধা থাকার কারণেই ফেসবুক বিজ্ঞাপনের প্রতি মানুষের আকর্ষণ প্রতিনিয়তই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
৫। প্রতিনিয়তই নতুন সব ফিচার যোগ হয়ে ফেসবুক বিজ্ঞাপনের মধ্যে
আপনি যাতে করে আরো বেশি করে কাস্টোমারের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারবেন সেদিকে ফেসবুক নিয়মিত গবেষণা করে যাচ্ছে। যেমন ধরুন আপনার পণ্য রিলেটেড প্রশ্ন করে কাস্টোমাররা আপনার ফ্যান পেজে মেসেজ করবে এমন বিজ্ঞাপনের ধারণাটি কিন্তু খুব বেশীদিন হয়নি ফেসবুকে যোগ হয়েছে।
এই নতুন ফিচারের মাধ্যমে ফেসবুক বিজ্ঞাপন অনেক বেশি আকর্ষণীয় এবং অনেক বেশি কার্যকরী হয়ে উঠছে। আর যেহেতু ফেসবুকের আয়, আপনার আমার এই বিজ্ঞাপন থেকেই, তাই এই বিজ্ঞাপনগুলোকে আরো অনেক বেশি কার্যকর করার পেছনে ফেসবুকের প্রচেষ্টারও কোন কমতি পাবেন না।
এছাড়াও আপনি যদি বেশ কিছু টিউটোরিয়াল দেখার পাশাপাশি আমাদের এই সিরিজটি সম্পূর্ণ ফলো করে থাকেন তাহলে আপনিও ফেসবুকের বিজ্ঞাপন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন। এছাড়া আরো কার্যকরী উপায়ে কীভাবে ফেসবুকে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করতে পারবেন।