গুগলের প্রথম পেজে নিজের ওয়েবসাইট র্যাংক করানোর স্বপ্ন সবাই দেখে। কারণ সার্চ ইঞ্জিন জায়েন্ট গুগলে ফার্স্ট পেজে র্যাংক করতে পারা মানে হলো, অসংখ্য ট্রাফিক এবং সেলস পাওয়া।
সাথে সাথে কম্পিটিটিভ এই সেক্টরে নিজেকে এক ধাপ এগিয়ে রাখা। এছাড়ার গুগলে ফার্স্ট পেজে র্যাংক করাতে পারলে ওয়েবসাইটের একটা ব্র্যান্ড ভ্যালুও ক্রিয়েট হয় বলা চলে।
আকর্ষণীয় এই কোর্সটি করতে এখানে ক্লিক করুন
কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, গুগলে ফার্স্ট পেজে র্যাংক করানো বলাটা যতোটা সহজ কাজটা ঠিক ততোটাই কঠিন।
কারণ একটাই, হাই কম্পিটিশন। বাস্তবতা হলো, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে সর্বোচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন একজন ব্যাক্তিকেও গুগলের ফার্স্ট পেজে র্যাংক করাতে বহু কাঠখড় পোড়াতে হয়।
নির্দিষ্ট কয়েকটি স্ট্র্যাটেজি ফলো করে রাতারাতি গুগলের ফার্স্ট পেজে র্যাংক করানোর স্বপ্ন যারা দেখে তাদের জন্য এটা একটা দুঃসংবাদই বটে। গুণীজনরা সবসময় বলে থাকেন, অধ্যাবসয়ই সাফল্যের চাবিকাঠি।
AliExpress.com Product – sale wall clock watch clocks 3d diy acrylic mirror stickers Living Room Quartz Needle Europe horloge free shippingগুগলে ফার্স্ট পেজে র্যাংক করার কৌশলসমূহঃ
সুতরাং, একজন সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন মানুষ হয়েও আপনি নিজের ওয়েবসাইটকে গুগলের ফার্স্ট পেজে র্যাংক করানোর ক্ষেত্রে কতোটা সাফল্য পেতে পারেন?
এই প্রশ্নের উত্তরটা এভাবে দেওয়াটা বেশি যৌক্তিক, হাই র্যাংকিংয়ের গ্যারান্টি দেওয়া কোনভাবেই সম্ভব না। আর্টিকেলের এই অংশ পর্যন্ত পড়া হয়ে গেছে নিশ্চই। যাই হোক একদমই হতাশ হবেন না। কারণ গুগলের ফার্স্ট পেজে র্যাংক করানোর ব্যাপারটা আপনি রাতারাতি রপ্ত করে ফেলতে পারবেন না।
স্টেপ বাই স্টেপ আগাতে হবে আপনাকে, আর নিয়মিত স্ট্যাডি করতে হবে। কারণ এই সেক্টরটাতে একটা পুরাতন মেথড ধরে নিয়ে অনেকদিন কাজ করে যাওয়ার বা সফলতা পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।
বলতে গেলে প্রায় প্রত্যেক দিনই নতুন নতুন স্ট্র্যাটিজি, নতুন নতুন কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে হবে আপনাকে। উল্লেখ্য যে, SEO এর ক্ষেত্রে কিওয়ার্ড রিসার্চ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়।
বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুনঃ
এসইও (SEO) করে সফল হওয়ার ৯ টি সহজ উপায় !
তাই আজকের আর্টিকেলে আপনাদের সাথে এমন কিছু কৌশল নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো গুগলের ফার্স্ট পেজে র্যাংক করানোর ক্ষেত্রে সহায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১। নিশের উপর গুরুত্ব দিন
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা SEO করে সাফল্য পেতে হলে আপনাকে অবশ্যই বর্তমান কম্পিটিশন বিবেচনা করে মাইন্ড সেটাপ করতে হবে। ধরুণ, আপনি একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট করতে চাচ্ছেন।
এই কোর্সটি করতে এখানে ক্লিক করুন
এটার SEO করার ক্ষেত্রে আপনি তো আর আলিবাবা বা আমাজনের সাথে টক্কর দিবেন না। যদি দিতে যান তাহলে এটা হবে নেহায়েত সময় এবং অর্থের অপচয়। আর মূলত এ কারণেই নিশ সিলেকশনটা খুব জরুরী।
একটু সহজ করে বলি, বড় পুকুরে ছোট মাছ না হয়ে বরং ছোট পুকুরে বড় মাছ হওয়ার চেষ্টা করুন। অর্থাৎ অনেকগুলো প্রোডাক্ট বা টপিক নিয়ে কাজ না করে বরং নির্দিষ্ট কিছু বা একটা দুইটা টপিক অথবা প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করুন।
আরেকটু সহজ করে বলি, গোটা বাসা সাজানোর জিনিস পাতি নিয়ে কাজ করার থেকে বরং আরেকটু স্পেসিফিক্যালি অর্থাৎ কাস্টোম কিচেন মেকওভার, বাথরুম ডেকোরেশনের মতো জিনিস নিয়ে কাজ করতে পারেন। কারণ এসব নির্দিষ্ট কিওয়ার্ডগুলো র্যাংক করানো তুলনামূলকভাবে সহজ এবং খুব দ্রুতই র্যাংক করানো যায়।
২। রিয়েলিস্টিক কিওয়ার্ড নির্বাচন করুন
গুগলে ফার্স্ট পেজে র্যাংক করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো সঠিক কিওয়ার্ড নির্বাচন। উদাহরণ স্বরুপ, আপনি যদি “Blue Wubbie Nubbie Doll” এর জন্য একটা পেজকে অপটিমাইজেশন করেন তাহলে র্যাংক করানোটা তুলনামূলক সহজ হবে এবং কয়েকদিনের মধ্যেই আপনি টপ র্যাংকে চলে আসতে সক্ষম হবেন। কিন্তু এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারটি হলো, এই বাক্যাংশটি কি নির্দিষ্ট কোন প্রোডাক্ট? যদি না হয় তাহলে এই বাক্যাংশের জন্য র্যাংক করে বিশেষ কোন লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে না।
রিয়েলিস্টিক কিওয়ার্ড নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনারা গুগল কিওয়ার্ড টুল বা keywordtool.io এর মতো অনলাইন টুলসগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
আপনার কিওয়ার্ডের রিলেভেন্ট কিওয়ার্ডের মধ্যে যেগুলোর সার্চ ভলিউম বেশি এবং কম্পিটিশন কম সেগুলো নিয়ে কাজ করুন। এরকম বেশ কিছু কিওয়ার্ড ফার্স্ট পেজে র্যাংক হয়ে গেলে আপনি সহজে আরও কম্পিটিটিভ কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করতে পারবেন।
৩। কন্টেন্টের প্রত্যেকটি অংশ নির্দিষ্ট কিওয়ার্ডের জন্য অপটিমাইজ করুন
আপনার নিশ এবং সেই নিশের উপর বেশ কিছু কিওয়ার্ড নির্বাচন করা হয়ে গেলে এবার আপনাকে সেই কিওয়ার্ডগুলো স্ট্র্যাটিজিক ওয়েতে ব্যবহার করে পেজে বসাতে হবে। একটা ব্যাপার মাথায় রাখবেন, কিওয়ার্ডের অত্যধিক ব্যবহার না করাটাই উত্তম। তবে বিশেষ কিছু জায়গায় অবশ্যই কিওয়ার্ডগুলো রাখাটা খুব কার্যকর-
>> ইউ আর এল (URL)। উদাহরণঃ www.yoursite.com/আপনার_কিওয়ার্ড
>> টাইটেল, ট্যাগ
>> হেডিংস (H1, H2 ইত্যাদি)
>> প্রত্যেকটা ছবির ট্যাগ এবং ক্যাপশনে
>> কন্টেন্টের ভেতরে
একটা বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখবেন, যে কিওয়ার্ড নিয়ে কাজ করছেন কন্টেন্টে যেনো সেই কিওয়ার্ড রিলেটেড বিস্তারিত তথ্য থাকে। লেখা যাতে বোধগম্য এবং নির্ভুল হয়। ভিজিটররা যাতে এসে কন্টেন্টে দেখে ফিরে না যায়।
৪। ওয়েবসাইটে প্রচুর পরিমাণে নতুন নতুন কন্টেন্ট যোগ করুন
কন্টেন্ট মার্কেটিং ইন্সটিটিউটের এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে ৮৮% বিজনেস টু বিজনেস (B2B) কোম্পানি ওভারল মার্কেটিং স্ট্র্যাটিজিতে কন্টেন্ট মার্কেটিংকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে।
এসব কন্টেন্ট যে শুধুমাত্র গদবাধা আর্টিকেল এমন কিন্তু নয়। পটেনশিয়াল কাস্টোমারদের এট্রাক্ট করার জন্য তারা ব্লগ পোস্ট, নিউজলেটার, ইনফোগ্রাফিক্স, ভিডিও ইত্যাদি ব্যবহার করছে।
গুগলে টপ র্যাংক করতে হলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত কন্টেন্ট আপ্লোড করতে হবে। তবে একটা ব্যাপার, কন্টেন্ট আপ্লোড করা লাগছে বলেই করছেন এমন হলে কিন্তু হবে না। আপনাকে অবশ্যই ইউজফুল, হাই কোয়টালিটি এবং কিওয়ার্ড রিলেটেড কন্টেন্ট তৈরি করে আপ্লোড দিতে হবে। তাহলেই সফলতা পাবেন।
এসব কন্টেন্ট আপনার র্যাংকিং বুস্ট করে দুইভাবে। প্রথমত, যতো বেশি কন্টেন্ট ততো বেশি কিওয়ার্ড এবং ততো বেশি র্যাংক হওয়ার সম্ভাবনা। দ্বিতীয়ত, যতো বেশি কন্টেন্ট ততো বেশি নতুন নতুন লিংক জেনারেট হচ্ছে। এছাড়াও, নতুন নতুন কন্টেন্টের জন্য আপনি অনেক ট্রাফিকও পাচ্ছেন। সুতরাং, যতো বেশি কন্টেন্ট ততো বেশি সফলতা।
৫। ব্যাক লিংক করুন
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে ব্যাকলিংক খুবই গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। Moz এর প্রকাশিত “2015 Search Engine Ranking Factors report” এই রিপোর্ট মতে ইনবাউন্ড লিংক গুগলে হাই র্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে অভাবনীয় ভূমিকা পালন করে থাকে। ব্যাকলিংক জেনারেট করার কিছু সহজ এবং কার্যকর স্ট্র্যাটিজি-
<< আপনার ওয়েবসাইটকে Yelp, Tripadvisor এবং Google My business এর মতো লোকাল বিজনেস ডিরেক্টরি এবং রিভিউ সাইটগুলোতে এড করুন।
<< আপনার নিশের পপুলার সাইটগুলো খুঁজে বের করে সেখানে গেস্ট পোস্ট করুন। যদি সেখানে আপনি ডু-ফলো লিংক এড করতে নাও পারেন তবুও আপনার ব্র্যান্ডভ্যালু কিন্তু কিঞ্চিত হলেও বাড়ছে।
<< এমন কন্টেন্ট তৈরি করুন যেগুলো অন্য ব্লগার বা সাংবাদিকরা নিজেদের সাইটে স্বেচ্ছায় ব্যাকলিংক করে।
<< বড় বড় ওয়েবসাইটগুলোর ব্রোকেন লিংকগুলো খুঁজে বের করুন এবং তাদের লিংকের সাথে আপনার ওয়েবসাইটের লিংক প্রতিস্থাপন করে ফেলুন।
<< আপনার ওয়েবসাইটটিকে এমনভাবে প্রস্তুত করুন যাতে ভিজিটররা আপনার সাইটকে বিভিন্ন জায়গায় মেনশন করে, অর্থাৎ রেফারেন্স হিসেবে আপনার ওয়েবসাইটের নাম উল্যেখ করে।
শেষকথা
আগেই বলেছি, গুগলে ফার্স্ট পেজে র্যাংক করার ব্যাপারটা রাতারাতি সম্ভব না। ধৈর্য ধরে আপডেটেড স্ট্র্যাটিজি ফলো করে নিয়মিত কাজ চালিয়ে যেতে হবে আপনাকে।
লো কম্পিটিশন কিন্তু হাই সার্চ ভলিউমের কিওয়ার্ডগুলো খুঁজে বের করে সেগুলো নিয়ে হাই কোয়ালিটির ইনফরমেটিভ আর্টিকেল বা কন্টেন্ট তৈরি করতে হবে। একটা বিষয় মাথায় রাখবেন, এই সেক্টরে আপনি কতটুক সফল হতে পারবেন এটা নিশ্চিত করে বলা সম্ভব না। তবে যদি নিয়ম মেনে নিরলসভাবে কাজ করে যান তবে সফলতা ধরা দিতে বাধ্য।
এভাবে কাজ করতে থাকলে এমনও হতে পারে যে, আপনি যেমনটা ভেবেছিলেন তারচেয়ে অনেকগুণ বেশি রেজাল্ট পেয়ে যেতে পারেন।
লেখক পরিচিতিঃ
Digital Marketing Expert | SEO Expert | Digital Marketing Trainer |
PPC Expert | Social Media Specialist | Consultant