আমাদের আজকের পর্ব ছোট্ট একটি প্রশ্নের মাধ্যমে শুরু করতে চাই। আপনি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি কোথায় দেখছেন ? মোবাইল ফোনে নাকি কম্পিউটারে ? উত্তটি আমাদের কমেন্ট করে জানান। আপনার উত্তর যদি হয় মোবাইল ফোন। তাহলে আরেকটি প্রশ্ন করি। আপনি কি মোবাইল ফোনের ইতিহাস সম্পর্কে জানেন ?
আপনার উত্তর যদি না হয়ে থাকে তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য। কারণ আজকের আর্টিকেলে আমরা জানবো কিভাবে মোবাইল ফোনের মতো একটি ইলেকট্রিক পণ্য আমাদের জীবনের সাথে মিশে গেছে এবং মোবাইল ফোনে প্রথম কথা বলেছেন কারা ?
মানুষের যোগাযোগের ব্যবস্থা উন্নতি করার কাজ শুরু হয়েছিল অনেক বছর আগে। যার ফলে ১৮৭৬ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সে টেলিফোন উদ্ভাবন করেন অ্যালেকজান্ডার গ্রাহাম বেল। তার এক বছর পর তিনি টেলিফোনকে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের ব্যবস্থা করেন। যেহেতো টেলিফোন তার এর সাথে যুক্ত থাকতো যার ফলে কিছু সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছিলো না। মানুষ তখন তার বিহীন ফোনের কথা ভাবতে শুরু করলো।
যার ধারাবাহিকতায় প্রথমবার মার্টিন কুপার ২০-৩০ জনের একটি দল নিয়ে মাত্র ৩০ দিনের মধ্যে মোবাইল ফোনের একটি ডেমো ফোন তৈরি করেন। ১৯৭৩ সালের এপ্রিল মাসে, নিউইয়র্কের হিলটন হোটেলে প্রথম মোবাইল ফোনের মডেল উপস্থাপন করা হয়। সেই মোবাইল ফোনটি লম্বায় ছিল ১০ ইঞ্চি এবং চওড়া ২ ইঞ্চি।
আপনি জেনে অবাক হবেন যে প্রথম মোবাইল ফোনের ওজন ছিল ১ কেজির থেকে একটু বেশি। এত সমস্যার মাঝে আরেকটি সমস্যা ছিল তা হলো এই মোবাইল ফোন দিয়ে মাত্র ২০ মিনিট কথা বললে চার্জ শেষ হয়ে যেত। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও মার্টিন কুপার প্রথম এই মোবাইলফোন দিয়ে কল করেন। তিনিই হলেন মোবাইল ফোন দিয়ে কল করা ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তি।
AT&T আবিষ্কৃত সেলুলার টেকনোলজি নামের একটা প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করেই মোবাইল ফোন আবিষ্কার হয়েছিল। কারণ তৎকালীন সময়ে মার্টিন কুপার AT&T তে কর্মরত অবস্থায় ছিলেন। মানুষ হাতে করে মোবাইল ফোন নিয়ে হাটবে সে বিষয়টি AT&T মোটেও ভাবে নি। তারা সেলুলার টেকনোলজি টি উদ্ভাবন করেছিল গাড়িতে মোবাইল ফোন যুক্ত করার জন্য। কিন্তু তাদের সেই প্রযুক্তি যে এতটা সারা ফেলবে তা কেউই ভাবেনি আগে।
মটোরোলা কোম্পানি সর্ব প্রথম মোবাইল ফোন বাজারে আনে। ১৯৮৩ সালে প্রথম বারের মতো বাজারে আসে মটোরোলা ডাইনা টিএসি (DynaTAC) মডেলের ফোনটি। সেই মোবাইল ফোনের মূল্য ছিল ৪০০০ ডলার যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৩ লক্ষ টাকা। এই মোবাইল ফোনটি এটি বোরো ছিল যে তখন এর ব্যবহারকারীর এই মোবাইল ফোনের নাম দিয়েছিলো দি ব্রিক এবং অনেকেই বলতো সু ফোন। তবে মার্টিন কুপার এর নাম দিয়েছিলেন ডায়নামিক অ্যাডাপটিভ টোটাল অ্যারিয়া কভারেজ বা ডায়নাট্যাক।
ভাবতেই অবাক লাগছে যে, সে দিন কার মোবাইল ফোন এবং আজকের মোবাইল ফোনের মধ্যে কতটা তফাৎ। এখন মানুষ মোবাইল ফোন টিভি, ক্যামেরা, মিউজিক প্লেয়ার, ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় ৮৭ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোনের আওতায় এসেছে এবং প্রায় ৫১১ কোটির ও বেশি মানুষ প্রতিদিন মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে।
আমরা এখন একটি দিন ও মোবাইল ফোন ছাড়া ভাবতে পারি না। মোবাইল ফোন এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে খুবই নিখুঁত ভাবে মিশে গিয়েছে।
আপডেটের ধারাবাহিকতায় মোবাইল ফোনের অনেক ভার্সন অতীতে এসেছে এবং ভবিষতেও আসবে। তবে আমাদের চেষ্টা করতে হবে যাতে মোবাইল ফোনের অপব্যবহার থেকে নিজেদের দূরে রাখা যায়।