কীভাবে ব্লগ লেখা শুরু করবেন ?
ব্লগ শব্দটির সাথে আমরা কমবেশি অনেকেই পরিচিত। তবে অনলাইনে ব্লগ থেকে আয় কিংবা ব্লগিং আদতে কি আর কেনই বা করবেন ব্লগিং, সেটা নিয়ে অনেকের মধ্যেই কিছুটা দ্বিধাদ্বন্দ্বের আভাস দেখা যায়। বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে দেখলে দেখা যায়, অনেকেই মনে করেন ব্লগ হল নির্দিষ্ট কিছু ওয়েবসাইট, যেখানে অনেক ব্লগার নিবন্ধন করার মাধ্যমে নিজেদের ব্যক্তিগত অভিমত, অভিজ্ঞতা অথবা গল্প-কবিতা প্রকাশ করে থাকেন।
ডোমেইন হোস্টিং ব্ল্যাক ফ্রাইডে অফার
তবে অনেকেই জানেন না বাংলাদেশে এই ধরনের জনপ্রিয় ব্লগগুলোর কর্তৃপক্ষ আপনাদের লেখার মাধ্যমেই তাদের ব্লগ থেকে আয় করে থাকেন যেটার কানাকড়িও ব্লগারদেরকে দেয়া হয় না।
কীভাবে ব্লগ লিখে আয় করবেন?
তাহলে অন্যের জন্য আর কেন লিখবেন? আজই শুরু করুন আপনার ব্লগটি এবং নিজের লেখার মাধ্যমে নিজেই শুরু করুন ব্লগ থেকে আয়। কিন্তু কীভাবে শুরু করবেন এই ব্লগিং এবং তার আদ্যোপান্ত বেশ কয়েকটি ধাপে ধাপে আমাদের আজকের লেখার বর্ণনা করা হয়েছে।
AliExpress.com Product – New Amazfit GTR 2 Smartwatch 14 Days Battery Life 5ATM Confident Time Control Sleep Monitoring Smart Watch For Android iOS Phoneপ্রথম ধাপঃ ব্লগিং বা ব্লগ থেকে আয় সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা অর্জন
ব্লগিং অর্থাৎ ব্লগ লিখে আয় করা পুরো বিশ্বে বেশ জনপ্রিয় একটি পেশা, তবে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশেও বর্তমানে শুরু হয়েছে এই ব্লগিং। ব্লগিং একটি উন্মুক্ত পেশা, এই পেশায় আপনার বস আপনি নিজেই! ইচ্ছে হলেই লিখবেন আবার ইচ্ছে হলেই ছুটি কাটাবেন আর আপনার ব্লগটি একটু জনপ্রিয় হতে শুরু করলেই সেখান থেকে বেশ অর্থও উপার্জন করতে পারছেন ।
আদতে ব্লগিং বা ব্লগ থেকে আয় হল আপনি যে বিষয় নিয়ে বেশ ভালোভাবে জানেন সেটা গুছিয়ে সবার সামনে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে উপস্থাপন করা।
দ্বিতীয় ধাপঃ কোন বিষয় নিয়ে শুরু করবেন আপনার ব্লগিং?
যদিও যে বিষয়টি সম্পর্কে আপনি ইতোমধ্যেই বেশ পারদর্শী সেটি নিয়েই ব্লগিং শুরু করাটা ভালো। তবে বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে যেহেতু আপনাকে তথ্য নিয়ে তেমন একটা ভাবতে হচ্ছে না, তাই আপনি চাইলে আদতে যে কোন বিষয় নিয়েই ব্লগিং শুরু করতে পারেন। এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো নিয়ে শুরুতেই আপনাকে ভাবতে হবে সেগুলো হলঃ
- নির্ধারিত বিষয়টি নিয়ে আপনি নিয়মিত লিখতে পারবেন কি না?
- আপনি যাদের জন্য ব্লগ লিখছেন তারা আপনার নির্ধারিত বিষয়টি নিয়ে পড়তে আগ্রহী কি না?
- আপনি নির্ধারিত বিষয়টি নিয়ে ভিন্ন কিছু মানুষকে দিতে পারছেন কি না–যাতে করে তারা আপনার ব্লগটির প্রতি আগ্রহী হয়।
এই তিনটি প্রাথমিক বিষয় নিয়ে ভাবতে গেলে বুঝতেই পারছেন, যে বিষয় নিয়ে আপনি খুব ভালোভাবে মানুষের কাছে নিজের লেখাটি উপস্থাপন করতে পারবেন তেমন একটি বিষয় নির্ধারণ করাই ভালো।
এখনই ফ্রীল্যান্সিং শুরু করুন : এখানে ক্লিক করুন
তৃতীয় ধাপঃ ব্লগ থেকে আয় করতে ব্লগের একটি নাম সিলেক্ট করা
দ্বিতীয় ধাপে আপনি যে বিষয়টি নির্ধারণ করেছিলেন, সেই বিষয়ের সাথে মিল রেখেই রাখতে হবে আপনার ব্লগের নাম। কেননা একজন পাঠক মূলত আপনার ব্লগের নাম দেখেই পড়তে আসবেন, আর তাই শুরুতেই ব্লগের বিষয়বস্তু নিয়ে একটি প্রাথমিক ধারণা পাঠককে দিয়ে রাখা ভালো। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় আপনি ব্লগিং শুরু করবেন “ভ্রমণ” বিষয়টি নিয়ে।
আর তাই আপনার ব্লগের নামের মধ্যেই ভ্রমণ অথবা ঘোরাফেরা এমন কিছু শব্দ রেখে দিলে সেটা বেশ ফলপ্রসূ হবে।
তৃতীয় ধাপের মধ্যেই আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় চলেই আসে, আর সেটি হল আপনার ওয়েবসাইটের ডোমেইন নির্ধারণ। আর তাই আপনার ডোমেইন “tavelwitharif.com” বা এই ধরনের হওয়াই বাঞ্ছনীয়। আপনাকে মনে রাখতে হবে এই ডোমেইন বা ওয়েবসাইটের নাম দিয়েই কিন্তু মানুষ আপনার ব্লগটিকে চিনতে পারবে।
চতুর্থ ধাপঃ ব্লগ থেকে আয় করতে -ফ্রি ব্লগিং Vs পেইড ব্লগিং
আপনি চাইলে অনলাইনে ফ্রি অর্থাৎ কোন খরচ ছাড়াই ব্লগিং শুরু করতে পারবেন। তবে মনে রাখতে হবে যেহেতু আপনি ফ্রি ব্যবহার করছেন তাই অনেক ধরনের সুযোগ সুবিধা চাইলেই আপনার ব্লগে রাখতে পারবেন না।
ফ্রি ব্লগিং এর জন্য বর্তমানে সবচাইতে জনপ্রিয় দুটি প্লাটফর্ম হলঃ blogger.com এবং wordpress.com। এই দুইটি সাইটে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে আপনি একটি ব্লগ তৈরি করে লেখালেখি শুরু করে দিতে পারবেন।
তবে পেইড অর্থাৎ টাকা দিয়ে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনেই ব্লগ শুরু করা ভালো। কেননা এক্ষেত্রে আপনার ব্লগ সাইটটির উপর নিজের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ থাকবে এবং আপনি যেভাবে খুশি সেভাবে ব্লগটিকে সাজিয়ে নিতে পারবেন। বর্তমান সময়ে ব্লগিং এর জন্য ওয়ার্ডপ্রেসে প্লাটফর্মটিই খুব সহজেই ব্যবহার করা যায় বলে বেশি জনপ্রিয়।
পঞ্চম ধাপঃ ব্লগের ডিজাইন
আপনি নিজে যদি ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট করতে না পারেন তাহলেও ভাবনার কিছু নেই। আপনি একজন প্রফেশনালকে দিয়ে নিজের ব্লগটি তৈরি করে নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন আপনার ব্লগটির ডিজাইনটি যেন আকর্ষণীয় হয় এবং পাঠকের জন্য বেশ সহজ হয়।
আগেও বলেছিলাম যে বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে আপনাকে আসলে কারো উপর খুব বেশি একটা নির্ভর না করলেও চলবে। আর এক্ষেত্রেও আপনি ইউটিউবে অনেক টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন যেখান থেকে আপনি খুব সহজেই ওয়েবসাইট ডিজাইন এবং তৈরি করা শিখে নিতে পারবেন।
এই আর্টিকেলে ওয়ার্ডপ্রেস প্লাটফর্মের উপরেই একটু বেশি গুরুত্ব দেয়া হয়েছে, কেননা আপনি এই প্লাটফর্মে কোন ধরনের ডিজাইন না শিখেও অনেক ফ্রি থিম এবং প্লাগিন দিয়ে নিজের ব্লগটিকে খুব চমৎকার ভাবে সাজিয়ে তুলতে পারবেন।
৬ষ্ঠ ধাপঃ নিজের ব্লগটিকে মানুষের কাছে পৌঁছে দিন
খুব সুন্দর করে আপনি নিজের ব্লগটিকে সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়েছেন এবং হয়ত বেশ চমৎকার ভাবে লেখালেখিও চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বেলা শেষে দেখতে পেলেন, আপনার ব্লগটি কেউই পড়ছে না আর এ নিয়ে আপনার মন ভীষণ রকম খারাপ হতেই পারে। তবে মন খারাপের কিছুই নেই, কেননা আপনি খুব চমৎকার লেখালেখি চালিয়ে গেলেও মানুষ হয়ত এখনো আপনার ব্লগটি সম্পর্কে জানেই না।
আর তাই লেখালেখির পাশাপাশি আপনাকে এখন নিজের ব্লগটিকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার বিষয়েও একটু সচেষ্ট হতে হবে। আসুন জেনে নেই কি কি উপায়ে আপনি নিজের ব্লগটিকে মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে পারবেনঃ
নিজের ব্লগটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হলেও দুই ধরনের উপায় আপনি পাবেন। তার একটি হল ফ্রি মেথড এবং অপরটি পেইড মেথড। আপনি যদি একটু পারদর্শী হন তাহলে এই ফ্রি মেথডটি দিয়েই আপনি বেশ কিছু পাঠক নিজের ব্লগে নিয়ে আসতেই পারবেন।
বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুনঃ
চাকরি কিংবা ব্যবসার বাইরে অনলাইনে আয়ের উপায় !
ফ্রি মেথডের মধ্যে প্রথমেই চলে আসে ফেসবুক টুইটারের কথা। আপনার হয়ত ইতোমধ্যেই অনেক ফেসবুক বন্ধু রয়েছে, আর তাদের কাছে ফেসবুকে নিজের ব্লগটি সম্পর্কে জানিয়ে দিতেও আপনার কোন খরচ গুনতে হবে না। আর আপনার লেখার বিষয়টি যদি বেশ আকর্ষণীয় এবং তথ্যবহুল হয় তাহলে দেখবেন আপনার ফেসবুক বন্ধুরাই আপনার লেখাটি নিজেদের ওয়ালে শেয়ার করছে এবং ফলাফল স্বরূপ আপনি পেয়ে যাচ্ছেন আরো বেশ কিছু পাঠক।
ফ্রি মেথডের মধ্যে আরেকটি বিষয় সম্পর্কে আপনার প্রাথমিক ধারণা থাকা প্রয়োজন, আর সেটি হল এসইও অর্থাৎ সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে গুগুল সার্চের মাধ্যমেও আপনার ব্লগটিকে উপরের দিকে নিয়ে আসা যায়। যেমন ধরুন আপনার ব্লগটি হল ভ্রমণ নিয়ে, এখন কেউ ভ্রমণ নিয়ে কোন বিষয়ে গুগুলে সার্চ দিলে আপনার ব্লগটিও সেখানে দেখাবে–যদি আপনার ব্লগটিতে ভালোভাবে এসইও করা হয়ে থাকে।
পেইড মেথডের মধ্যে আছে ফেসবুক এবং গুগুলে নিজের ব্লগটি সম্পর্কে বিজ্ঞাপন দেয়া, ইমেইল এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন সহ খুঁটিনাটি আরো অনেক কিছুই। তবে আপনার ব্লগটিতে যদি খুব ভালোভাবে এসইও করা হয়ে থাকে তাহলে আপনাকে কখনই পেইড মেথড সম্পর্কে ভাবতেই হবে না। ফ্রি মেথডগুলোর মধ্যে একটু সতর্ক এবং কৌশলী হতে পারলেই আপনি প্রচুর পাঠক পেয়ে যাবেন।
আর আপনার ব্লগে যদি গুগুল এডসেন্স অথবা অন্য কোন কোম্পানির বিজ্ঞাপন দেয়া থাকে তাহলে আপনি নিজের লেখার মাধ্যমেই মাস শেষে একটা ভালো পরিমাণ অর্থ আয় করে নিতে পারবেন ব্লগিং দিয়েই। এই ব্লগিং বিষয়টি নিয়ে একটু মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে পারলেই আপনাকে হয়ত আর চাকরি এবং ক্যারিয়ার নিয়ে আর ভাবতেই হবে না। বাসায় বসে নিজের ব্লগে লেখালেখিকেই আপনি ক্যারিয়ার হিসেবে গ্রহণ করে নিতে পারবেন।
লেখক পরিচিতিঃ
Digital Marketing Expert | SEO Expert | Digital Marketing Trainer |
PPC Expert | Social Media Specialist | Consultant