অনেক দিন ধরেই হয়তো আপনি একটি ইউটিউব চ্যানেল বানানোর কথা ভাবছেন ??
কেউ যদি আপনাকে বলে একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলার জন্য এখন খুব দেরি করে ফেলেছেন তাহলে তাদের কথা না শোনায় ভালো । বর্তমান সময়ের বুমিং প্ল্যাটফর্ম গুলোর মধ্যে ইউটিউব অন্যতম। তাহলে দেরি না করে আজই কাজ শুরু করে দিন।
কিন্তু ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে কাজ আরম্ভ করার আগে কিছু বিষয় মাথায় রেখে শুরু করলে আপনার সফলতা পাবার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।
ইউটিউব চ্যানেল এর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সমূহঃ
কন্টেন্ট প্ল্যান :
আপনাকে প্রথমে কন্টেন্ট প্ল্যান করতে হবে, আপনি আসলে কোন ধরণের কন্টেন্ট বানাতে চান।
কি নিয়ে ভিডিও তৈরি করবেন ??
কেন মানুষ আপনার ভিডিও দেখবে ??
কিভাবে মানুষকে আপনি আপনার ভিডিওয়ের শেষ পর্যন্ত ধরে রাখবেন ??
এই প্রশ্নগুলোর উত্তর আপনার জানা থাকতে হবে । তবে আপনার যে বিষয়ের প্রতি ইন্টারেস্ট রয়েছে সেসব বিষয়ের টপিক নিয়ে কন্টেন্ট বানানো উত্তম।
যেমনঃ অনেকে ট্র্যাভেল করতে পছন্দ করে তারা ট্র্যাভেল সম্পর্কিত ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করে । আবার অনেকে রান্না করতে পছন্দ করে তারা রান্নার ভিডিও নিয়ে কাজ করে।
সঠিক যন্ত্রপাতি :
ক্যামেরাঃ
শুরুর দিকে হয়তো আপনার মোবাইল দিয়েই ভিডিও করা যাবে কিন্তু আপনি যদি লম্বা সময় ধরে ভিডিও করতে চান তাহলে ক্যামেরার বিকল্প নেই। সেক্ষেত্রে আপনার DSLR (ডিএসএলআর) ক্যামেরা কেনায় ভালো হবে । বাজারে অনেক ধরণের DSLR (ডিএসএলআর) ক্যামেরা পাওয়া যায়, আপনি চাইলে আপনার বাজেটের মধ্যে কিনে নিতে পারবেন ।
ট্রাইপডঃ
ভিডিও করার জন্য ট্রাইপড অবশ্যই প্রয়োজন কারণ লম্বা সময় আপনি ক্যামেরা হাতে রেখে ভিডিও করতে পারবেন না । বাজারে মোবাইল এবং ক্যামেরার জন্য আলাদা আলাদা ট্রাইপড পাওয়া যায় ।
মাইক্রোফোনঃ
ক্যামেরার বিল্ট ইন মাইক্রোফোন দিয়ে হয়তো আপনি কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন কিন্তু আপনি যদি নিখুঁত শব্দ পেতে চান ভিডিওতে তাহলে এক্সটার্নাল মাইক্রোফোন ব্যবহার করা উত্তম। সেক্ষেত্রে বাজারে Boya M1 নামের একটি মাইক্রোফোন পাওয়া যায় যা কম বাজেটের মধ্যে সবচেয়ে ভাল আপনি চাইলে কিনে ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
গ্রিন স্ক্রিনঃ
সাক্ষাৎকার টাইপ ভিডিওতে গ্রিন স্ক্রিন আসলে বেশি ব্যবহার করা হয়। যার ফলে পরবর্তীতে আপনি চাইলে পিছনের ব্যাকগ্রাউন্ড খুব সহজে পরিবর্তন করে ফেলতে পারবেন । গ্রিন স্ক্রিন কিনতে ক্লিক করুন- গ্রিন স্ক্রিন
AliExpress.com Product – In Stock 2020 Global Amazfit Bip S Smartwatch 5ATM waterproof built in GPS GLONASS Bluetooth Smart Watch for Android iOS Phoneস্ক্রিন রেকর্ডিং সফটওয়্যারঃ
আসলে গেমিং চ্যানেল এটি বেশি কাজে লাগে। আপনি যদি কম্পিউটার স্ক্রিন রেকর্ডিং করতে চান তাহলে এই স্ক্রিন রেকর্ডিংসফটওয়্যার থাকা আবশ্যক । এই কাজের ক্ষেত্রে OBS সফটওয়্যার বেশ জনপ্রিয়, যা আপনি ফ্রিতে এবং সাচ্ছন্দে ব্যবহার করতে পারবেন।
যেকোন ধরণের ইউটিউব চ্যানেল সংশ্লিষ্ট Accessories কিনতে এখানে ক্লিক করুনঃ- YouTube Accessories
ধারাবাহিক ভাবে ভিডিও আপলোডঃ
দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখার জন্য আপনাকে নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে। কারণ রুটিন মাফিক কন্টেন্ট আপলোড খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
শুরুর দিকে হয়তো মনে হতে পারে আপনি প্রতিদিন একটি করে কন্টেন্টের ভিডিও আপলোড দিতে পারবেন। কিন্তু ৩ বা ৬ মাস পরে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে প্রতিদিন ভিডিও কন্টেন্ট দেয়ার মতো টপিক থাকবে তো ?? আর তখন যদি ভিডিও প্রতিদিন আপলোড না দিতে পারেন তাহলে আপনার ভিউস কমে যাবে।তাই প্রথম থেকেই একটি নিৰ্দিষ্ট রুটিন মাফিক কন্টেন্ট আপলোড করুন।
এখনই ফ্রীল্যান্সিং শুরু করুন : এখানে ক্লিক করুন
স্মার্ট প্রেজেন্টেশন:
ইউটিউবের ভিডিও আসলে মানুষের চোখের খাদ্য, আপনি যত বেশি স্মার্ট ভাবে সব কিছু প্রেজেন্ট করতে পারবেন তত বেশি মানুষ দেখতে আগ্রহ বোধ করবে।কিছু বিষয় আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবেঃ
- স্মার্ট টাইটেল
- ধারাবাহিক ফরম্যাট বা একই স্টাইলের ফরম্যাট
- ভিডিও থাম্বনেইল
কিভাবে প্রমোশন করবেন ??
আপনার কি মনে হয় আপনি ভিডিও দিলেই আপনার ভিডিও মানুষ দেখা শুরু করবে, না কখনো না। আপনাকে ভিডিও প্রমোশন করতে হবে। আর ইউটিউব থেকে যদি মনিটাইজ করে ইনকাম করতে চান সেক্ষেত্রে মনিটাইজেশন (monetization) পাওয়ার জন্য আপনার ইউটিউব চ্যানেলে অবশ্যই ১,০০০ সাবস্ক্রাইবার (subscriber) এবং বিগত ১২ মাসে ৪,০০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম থাকতে হবে । অনেক সময় যা অর্জন করতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে । প্রমোশনের জন্য কি কি করবেন –
সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ারঃ আপনাকে সোশ্যাল মিডিয়া গুলোতে নিয়মিত শেয়ার করতে হবে । অনেক সদস্য আছে এমন বড় বড় গ্রূপ গুলোতে শেয়ার করতে হবে।
ভিডিওতে আবেদনঃ আপনার প্রতিটি ভিডিওয়ের শুরুতে সবাইকে সাবস্ক্রাইব করার জন্য আবেদন করতে হবে।
ভিডিও এসইও (SEO)করতে হবেঃ ভিডিও SEO করার জন্য vidIQ এবং TubeBuddy নামক বেশ কিছু ভালো ফ্রি টুলস আছে যেগুলোর ব্যবহার জানা জরুরি। কিভাবে আপনার ইউটিউব ভিডিও SEO করবেন তার জন্য আমার এই ভিডিওটি দেখতে পারেন।
ভিডিও এডিটিং জানাঃ আপনাকে বেসিক ভিডিও এডিটিং জানতে হবে, শুরুতে আপনি Filmora software ব্যবহার করতে পারেন। তবে এছাড়া Adobe Premiere Pro বা Camtasia software এগুলোও চাইলে ব্যবহার করতে পারেন ।
কি কি উপায়ে ইউটিউব (YouTube) থেকে টাকা উপার্জন করা যায় ??
- গুগল অ্যাডসেন্সের (Google AdSense) মাধ্যমে
- প্রোডাক্ট প্রমোশোন করে কমিশনের মাধ্যমে (Affiliate Marketing )
- স্পনসরশিপের মাধ্যমে
- অন্যদের প্রমোশন করে
- পাবলিক ইভেন্ট করে
ভিউআর দের সঙ্গে সর্বদা কানেক্টেড থাকুনঃ
প্ল্যান মাফিক নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন, কমেন্টের রিপ্লাই করুন, ভিউআররা পরবর্তী কন্টেন্ট হিসেবে কি চায় তা জানতে চান। প্রশ্ন উত্তর পর্ব রাখুন, এভাবে যত বেশি কানেক্টেড থাকা যায় ততই আপনার ইউটিউব চ্যানেলের গুরুত্ব বাড়বে।
পরিশেষে কিছু কথাঃ
আপনার ইউটিউব চ্যানেল নিয়ে নিজস্ব একটি লক্ষ্য স্থির করুন তারপর কাজে লেগে যান। শুরুর দিকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে কারণ সাফল্য দ্রুত না,আস্তে আস্তে পাবেন।নিয়মিত ভিডিও আপলোড করুন আর নেগেটিভ কমেন্ট এড়িয়ে চলুন ।
আপনি কোন বিষয় নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল করতে চান আমাদের কমেন্ট করে জানিয়ে দিন…
লেখক পরিচিতিঃ
Digital Marketing Expert । SEO Expert | Digital Marketing Trainer |
PPC Expert | Social Media Specialist | Consultant